বৃষ্টি শেষে- bengali love stories | romance love stories | the best bangala golpo 2021 love

বৃষ্টি শেষে- bengali love stories | romance love stories


আজকের Bangla Love Story টির নাম -" বৃষ্টি শেষে " বিষয় - অফুরন্ত প্রেম ভালোবাসা, love story Golpo এবং Love Story Bangla ও World Library এবং ভালোবাসার গল্প আরও পাওয়ার জন্য আমাদের ব্লগ টিকে সাবস্ক্রাইব করে আমাদের সাথে থাকুন, গল্পটি পড়িয়া যদি আপনার ভালো লাগিয়া থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট এবং শেয়ার করিতে ভুলিবেন না।


 বৃষ্টি শেষে



 


'তুই এত স্টিরিওটাইপ চিন্তা নিয়ে থাকিস কি করে এই সময়ে!'
'মানে?'
'কি মানে আবার, সবই তো শুনছি মন দিয়ে এতক্ষন ধরে1'
'হু,সেটা এগরোল শেষ হওয়ার স্পিড দেখে বোঝাই যাচ্ছে।'
'আহ্, শোন বলি....'
             কথাটা পুরো না বলে শোভন যেভাবে এগরোলটা মুখে গুঁজে দিলো তাতে রেহান ভাবলো নিজের ভাগেরটাও ওকে দিয়ে দিলেই পারে। রেহান জানে শোভনকে বলে লাভ নেই,ও সিরিয়াসলি কিছুই নেয়না। রেহান এটাও জানে যে দিনের শেষে সেই শোভনই ওর কথা শুনবে মন দিয়ে। তাই তো ওকে খুশি করার জন্য মাঝে মাঝে এসব এগরোলের ঘুষ দিতে হয়....না না রেহান মজাই পায় এসবে।
'তুই কি বলতে চাইছিস যে তাড়াহুড়ো করে ফেলেছিস বলে টিকিয়ে রাখতে পারবিনা?'
"ওরমই মনে হচ্ছে কেন জানি,আসলে আমি ভাবিওনি যে সত্যিই হ্যাঁ বলে দেবে!'
'তুই খুশি নোস্?'
'খুশি কেন হবোনা,খুশি কিন্তু ওই মনে হচ্ছে কেবল যে তাড়াহুড়ো করে ফেললাম মনে হয়।'
'আরে, বাবা তোকে তো আর ঘোরায়নি,সোজাসুজি বলে দিয়েছে, তার মানে কোনো প্যাঁচ নেই,তাহলে খামোকা আমাকে " are you lost babygirl" এর মতো ফিলিংস দিচ্ছিস কেন?'
রেহান ফিক্ করে হেসে ফেলল এবার,আসলে ও অনেক চেষ্টা করছে বোঝানোর কিন্তু শোভনকে বোঝাতেই পারছেনা,আর সত্যি বলতে ও নিজেও ব্যাপারটা নিয়ে খুব কনফিউজড, নিজেও বুঝতে  পারছেনা ওর অসুবিধেটা ঠিক কোথায় হচ্ছে!
ওরা হাঁটতে হাঁটতে প্রায় নদীর ধার ওবধি চলে এল।আজকে নদী অনেক শান্ত, কোনো রকম উচ্ছাস নেই,ঠিক রেহান-অদিতির সম্পর্কের মতো.....
                      

অদিতি রেহানকে ফোন করতে গিয়েও করলোনা,ভাবলো এখন আবার ফোন করলে রেহান বিরক্ত হবে,একঘন্টা আগেই রেহানের সাথে চ্যাট হয়েছে। রেহান সারাক্ষণ কথা বলতে চায়না। অদিতির খারাপ লাগলেও ও মানিয়ে নিয়েছে– সত্যি সারাক্ষণ কি কথা বলবে রেহান ওর সাথে,লকডাউনের জন্য প্রায় সারাদিন ঘটনাবিহীনই হয়,কথা বলার বিষয়টাই খুঁজে পায়না রেহান।
প্রথমে অদিতির খুব অবাক লেগেছিল, আরে নিজের গার্লফ্রেন্ডের সাথে কথা
বলতে আবার বিষয় লাগে নাকি! ও ওর বাকি বান্ধবীদের তো সারাদিনই প্রেম করতে দেখে। কিন্তু রেহান! যাই হোক....
                    আসলে অদিতি রেহানের সাথে ছোটোবড়ো সব কথা বলতে চায়,দুজনেরই নতুন শুরু এই সম্পর্কের,তাই অদিতি ভাবে রেহানের সাথে সবসময় কথা বললেই দুজন দুজনকে জানবে। অদিতি ভাবে সম্পর্ক শুরু হওয়ার আগে যে রেহান এত কিছু বলতো ওকে সেই রেহানই এরম চুপ হয়ে যায় কেন মাঝে মাঝে, দু-একটা মেসেজ,তারপরই অফ্....আবার চার পাঁচ ঘন্টা পরে মেসেজ....আবার অফ্। এ কি ধরনের ছেলে রে!
অবশ্য অদিতি এটাও জানে যে সম্পর্কের শুরুতেই রেহানকে প্রচন্ড ভাবে আঁকড়ে ধরতে গেলে ও বেচারা দমবন্ধ হয়ে যাবে....রেহানের কাছে নিজের একটুকরো আকাশটাই সবার আগে।
বৃষ্টি আসছে,অদিতি ছুটলো মন আর ঘরের দরজাটা বন্ধ করতে,নাহলে  খামোকা ওর এইসব ভাবনা ওকে ভিজিয়ে দেবে,আর যাই হোক,অদিতি মনকে ভিজতে দেবেনা.....।


                                        


অদিতি অদিতি অদিতি.....নাহ্ রেহান সত্যিই পাগল হয়ে গেছে,এত সুন্দর কেউ কি করে হয়? এত সুন্দর মানুষকে ভালোবাসার সৌভাগ্য রেহানের কপালে জুটবে সেটা ও ভাবেওনি। এই তো সেদিনও তনিমার সাথে কথা বলতে গিয়ে রেহানের সেই পুরোনো দীর্ঘশ্বাসটা বেরিয়ে গেল....."রেহানের তনিমা"...এই ক্ষয়ে যাওয়া নামটাকে আঁকড়ে বাঁচতে চাইছিল রেহান.....

কিন্তু অদিতি......

কলেজ লাইফের শুরু থেকেই রেহান ভাবত যে এই এত প্রফেশনাল লাইফ কিকরে কাটাবে ও?

কিন্তু ওই, অদিতি......

রেহান অদিতিকে দেখেনি,বলা ভালো লকডাউনের অত্যাচারে দেখা হয়নি...ফেসবুকেই পরিচয়,একই কলেজের মেয়ে....এটুকুতেই রেহান নিজেকে বেঁধে রেখেছিল...রোজ রাতে তনিমাকে খুঁজতে গিয়ে রেহান এত কিছু ভাবতও না,কি হবে...সেই তো দুদিন পরে রেহানের হয়ত অদিতির নামটাই মনে থাকবেনা,হলোও তাই.....

তবুও অদিতি....

উৎসাহের বশেই হোক আর ফ্লার্ট করার মজাতেই হোক রেহান দুম করে অদিতিকে মেসেজ করে দিল -
"তোমায় আজকে দেখলাম কলেজ ছুটির পর।"
ব্যাস্, এরপর কোনো মেয়ে ব্লক করা ছাড়া আর কিই বা করতে পারে?

কিন্তু ওই যে অদিতি....

ঠিক দু মিনিটের মধ্যে মেসেজ
"তা,কেমন লাগলো দেখে?"
রেহান আর যাই হোক ফ্লার্ট করতে গিয়ে মেয়েদের অসম্মান কখোনো করেনি,আর ওর ফ্লার্টকে কোনো মেয়ে পাত্তা দিলে ও নিজেও চুপসে যায়। ও ভয়ে আর কোনো মেসেজই করলোনা।
পরেরদিন আবার সেই কলেজ,জিম,টিউশনের ডামাডোলে রেহানের মাথাতেও ছিলোনা এত কিছু। নেট ওন করতেই অদিতির মেসেজ-
"দেখে কি ভালো লাগেনি আমায়?"
এবার উত্তর না দেওয়াটা অভদ্রতা হয়ে যাবে। রেহান ও তাই লিখলো-
"কেন লাগবেনা?"
আর এই কেন লাগবেনার জবাব অদিতি একমাস আগে দিয়েছে–
"আমারো তোমায় খুব ভালো লাগে রেহান।"

                                ৪

কিছু মানুষ আমাদের জীবনে থাকে যারা আমাদেরকে বহুদিন আগে ছুটি দিলেও আমরা যেন মন থেকেই সেই ছুটিটা ভোগ করতে চাইনা,মনে হয় করুক না  অবহেলা,নাহয় নাই বুঝলো আমায়–তবুও তো পর করে দেয়নি,কথা তো বলে....ওইটুকুই রসদ। তনিমা রেহানের জীবনে ঠিক সেরমই একটা দুর্দান্ত উপন্যাসের ট্র্যাজিক অধ্যায়....এবং শেষ অধ্যায়।
রেহান জানে যে রোজ রাতে ওর গিটারের তারে যে সুরগুলো ভাসে সেটা তনিমার জন্যই...রেহান নিজেও আর নতুন সুর তৈরি করতে পারেনা।
                   রেহান ক্লান্ত...তনিমার কাছ থেকে নিজেকে বার করে আনার অনেক বার চেষ্টা করেছে রেহান,কিন্তু পারেনি....যতদিন না অদিতিও ওর হয়ে চেষ্টা করলো। এবং সবচেয়ে বড়ো কথা...অদিতির এই চেষ্টায় রেহানের কোনোরকম ক্লান্তি আসেনি...যেন অদিতিই তনিমাকে বলেছে এবার রেহানকে আসলেই ছুটি দিতে।
"কিরে,শালা...কোথায় তুই?" শোভনের কথা এতক্ষণে কানে আসলো রেহানের।
"আছি,বল...."
"শোন এসব মদ না খেয়ে মাতালের মতো লুকস্ আমায় দিবিনা। তোর যখন অসুবিধে হচ্ছে ওকে বলে দে–
"আমরা মনে হয় তাড়াহুড়ো করে ফেলেছি খুব,সো আই নিড অা ব্রেক...একবছর পরে তোমার সাথে যোগাযোগ করছি"।"
"এই তোর মুখ থেকে কোনোদিনো ভালো কিছু বেরোয়না? এটা বললে না একবছর কেন সারাজীবনের জন্যই ব্রেক পেয়ে যাব,তখন দেখব কাকে বৌদি বলিস তুই!"
"তাও ঠিক.."
"আর এই যে little shit দুমাস আগে তুমিই আমাকে বলছিলে -"ভাই প্রপোস কর,হয়ে যাবে সব,সব সেট হয়ে যাবে".... বলি তাড়াহুড়ো কে করছিল আমি না তুমি? শালা কোথায় ভাবলাম সামনা সামনি প্রপোস করব...এই তোর জন্য অনলাইনে বলতে হলো।"
"আহ্,সেটা আমি আমার দিকটা চিন্তা করে বলেছি, দেখলাম যে আমার সব বৌদিদের সম্রাজ্ঞী আসতে চলেছে, তাহলে সুযোগ কেন ছাড়বো বল?"
"তবে রে...."
রেহান দেখল বৃষ্টি আসছে আর শোভন আগে থেকেই সোশ্যাল
ডিস্টেন্স মেইনটেইন করে দূরে চলে গেছে....এতটাই দূরে যে রেহানের চাটিটা স্রেফ হাওয়া খেয়ে ফিরে আসল।
"চলে আয়, রোজ রোজ বৃষ্টিতে ভিজলে মনও ভিজে যাবে...।"

                                ৫


"কি হয়েছে তোর?"
"কি হবে আবার?"
"ও,বেশ গুড নাইট তাহলে।"
"এখনি? সবে ১২.৩০ টা বাজে।"
"কথা যখন নেই তাহলে জেগে থেকে কি লাভ, এর চেয়ে গান চালিয়ে শুয়ে
পড়ি।"
"রাগ করছিস কেন? বল কি বলবি।"
"নাহ্, সব কথা একদিনে বললে তো কাল আবার কথা বলার বিষয়টাই পাবোনা আমরা,তাই না?"
"এ আবার কেমনতর জেদ,বললাম তো বল।"
"বলে দিলাম তো গুড নাইট....বাই।"
অনেক হয়েছে,রেহান আর অদিতিকে তোষামোদ করতে পারবেনা,বিরক্তিকর সব। কথা যখন বলতে চায় রেহান তখনই এই ধরণের কথা...আরে বাবা দুপুরে সময় দিচ্ছি, সন্ধে বেলা ভিডিও কল করছি,রাতে কথা হচ্ছে.... আর কত সময় চায় ও,একটা মানুষের সাথে সারাক্ষণ আঠার মতো লেগে থাকা যায় নাকি!
রেহান উঠে পড়ল,প্রায় রোজ দিনই এই বাহানা অদিতির, আরে বাবা তোরও কি সারাক্ষণ আমার সাথে থাকতে ভালো লাগে? তোর বাকি বন্ধু নেই....আমি তো তোকে কখনোই বলিনি একদম ওদের সাথে বেশি কথা বলবেনা,ছেলেদের সাথে কথা বন্ধ.... নিজের জীবনের পুরোটা আমায় দিতে হবে– এই ধারণায় বিশ্বাসী নয় রেহান।
"মম,বল "
"কি করছিস শালা?"
"তোর মতো সিংগেলদের লাইফ নিয়ে ভাবছিলাম আর জ্বলছিলাম।"
"কেন বে হারামজাদা, দেখে বুঝিস না আমায় যে তোকে মিংগেল দেখে আমার বুকের অর্ধেকটা জ্বলে?"
"বাকি অর্ধেক?"
"চ্যাংরামো হচ্ছে?  আনন্দ হয় বোঝোনা?"
"এমনি মজা করলাম।"
"সে জানি,আসলে কি বলতো তোর দিক থেকে চিন্তা করলে ব্যাপারটা একটু জটিলই,মানে সত্যিই লোকের যেখানে সময় না দেওয়ার কারণে ব্রেক আপ হয়ে যাচ্ছে সেখানে তুই সময় দিয়েও খুশি হতে পারছিস না।"
                           এই জন্যই ও "রেহানের শোভন" সেই ক্লাস 7 থেকে,রাত ১.৩০ এ এইভাবে রেহানকে অন্তত কেউ ফোন করেনা।
"সময়টা কোনো ফ্যাক্টর নয় রে শোভন,কথা বলার বিষয়টাই যদি খুঁজে না পাই তাহলে সারাদিন সময় দিলেও কোনো লাভ নেই।"
"ওটাই বলছি,শোন, তুই ওকে বলতে দে,ও তোকে যা যা বলতে চায় বলুক,তোর শুনতে তো আপত্তি নেই,তুইও ওকে পুরোনো কোনো মজার ঘটনা বল,স্কুল লাইফ নিয়ে আলোচনা কর,ভালো লাগা খারাপ লাগা গুলো জান..কিন্তু ধীরে ধীরে,একদিনে সব না।"
"ধুর এত কিছু অনলাইনে হয় নাকি,সামনাসামনি দেখা হলে আপনা আপনিই কত কথা চলে আসে।"
"সে তো জানি, সে উপায় না থাকলে কি করবি? আমি জানি তুই কতদিনে ওর শহরে ওর হাত ধরে হাঁটবি তার অপেক্ষায় আছিস,কিন্তু শহরে এখন প্রবেশ নিষেধ। অনলাইনটাকেই দুজনের শহর বানিয়ে নে।"

             রেহান শোভনকে প্রায়ই বলে এ শহরের মন নেই।
                     আজ শোভনের কথা শুনে মনে হলো আসলে
রেহানের নিজেরই এ শহরে মন নেই।
রেহান অদিতিকে দেখতে চায়,অদিতির শহরে অদিতির কোলে মাথা দিয়ে একটা ঘুম দিতে চায়...একটা চিন্তাহীন ঘুম....যে ঘুমের মধ্যে অদিতি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বলবে কানে কানে–"রেহান,ওই দেখো শুকতারা,সকাল হয়েছে...উঠবেনা?দেখবেনা আমার শহরটাকে আমার হাত ধরে? শুনবেনা আমার শহরের হাওয়ায় তোমার আমার নাম? রেহান...উঠবেনা তুমি? রেহান...।"


                              ৬


কতগুলো মুহূর্ত থাকে যে মুহূর্তগুলোয় আমরা রোজ হারিয়ে যেতে চাই,রোজ কাছে পেতে চাই....অদিতির জীবনে সেই মুহূর্তগুলোর মধ্যে একটা রেহানের সাথে ফোনালাপ বা মোবাইলের ৬.৫ ইঞ্চির স্ক্রিনে রেহানের মুখটা দেখা। অদিতি আজকাল রেহানকে ছাড়া কিছুই ভাবতে পারেনা,ও ক্রমশ ডুবে যাচ্ছে রেহান নামক নদীর চোরাস্রোতে।
               অথচ রেহানকে দেখো....কোনোরকম উচ্ছাস ও অদিতির কাছে প্রকাশই করেনা।অদিতিকে দেখে বা ওর সাথে কথা বলে ওর আদৌ ভালো লাগলো কিনা সেসব জানানোর কোনো ব্যাপারই নেই ছেলেটার।
অদিতি শেষে বিরক্ত হয়ে রেহানকে বলেছিলো যে ইচ্ছে হলেই যেন ভিডিও কল বা ফোন করে...নইলে ওই সারাদিনের ২-৩ ঘন্টার চ্যাট যেরম চলছে ওরমই চলুক। রেহানও আর কিছু বলেনি এই ব্যাপারে।
                            অদিতি কিছুতেই মেলাতে পারছেনা রেহানের এই নিস্পৃহ আচরণকে...যে অদিতি কোনদিনও কাউকে খুশি করার জন্য নিজেকে অবহেলা করেনি সেই অদিতিই আজকাল রেহানকে যেনতেন প্রকারেণ খুশি করতে বদ্ধপরিকর। রেহান কথা কম বলতে চায়-বেশ ও কথা কমিয়ে দিলো...রেহান বেশি প্রেমের কথার ঘ্যানঘ্যান পছন্দ করেনা-বেশ ও সেটাও কমিয়ে দিলো...আর কি চায় রেহান? কেন ওর প্রতি রেহানের কিছু বলার থাকেনা? কেন রেহান ওর সব কথা শুনতে চায়না?কেন?
রেহান অদিতির গলায় গান শুনবে বলে এক একদিন ফোন ছাড়তইনা,অদিতি গান করেই যেত পরপর....বিকেল শেষ হয়ে যেত তবু রেহান ছুটি দিতনা ওকে। আর এখন..
"এই গান শুনবে একটা? নতুন শিখেছি।"
"এখন!...পরে তুমি ভয়েস পাঠিও না হয়।"
রেহানের গল্প-কবিতাও আজকাল অদিতির কাছে প্রথমে আসেনা,স্টেটাস থেকে অদিতিকে পড়ে নিতে হয়।
অদিতির কাছে রেহান এখন অনেকটা ভালো স্বপ্নের মতো,সারাদিন মন ভালো থাকলে মানুষ যেমন ভালো স্বপ্ন দেখে মাঝেমধ্যে.... রেহানও ঠিক তেমন ওর কাছে।
অথচ রেহানকে অদিতি বাস্তবতার জমিতে দাঁড় করিয়ে স্বপ্নটা সাজাতে চেয়েছিল।

                             ৭


তনিমা রেহানের সাজানো উপন্যাসের শেষ পৃষ্ঠা হলেও রেহান যখনই উপন্যাসটা নতুন করে পড়ে সে তনিমার উপসংহারটাকেই ভূমিকা হিসেবে দেখে...বা বলা যায় দেখতে ভালোবাসে। পুরোনো উপন্যাসের শেষটা রেহান রোজ নতুন করে সাজায়,নতুন করে ভাবে...পরের দিন আবার অদিতির উপন্যাসেও কলম চালায়...তবুও একলা রাতে তার সঙ্গী সেই শেষ পৃষ্ঠাটাই...অদিতি নামক ভূমিকাতেই সে এখনো আটকে।
                  অদিতি রেহানকে তনিমার কাছ থেকে বের করে আনলেও রেহান আবার নতুন করে তনিমার কাছে বাঁধা পড়ছে...তনিমা রেহানকে ছুটি দিলেও রেহান কিছুতেই ওর আকর্ষণ থেকে নিজেকে বের করতে পারছেনা।
   রেহান অদিতিকে ভালোবাসে...এই কথাটা ও নিজে জানে কিন্তু কিছুতেই নিজেকে প্রমাণ দিতে পারছেনা এই ভালোবাসার।ও বারবার হারিয়ে যাচ্ছে প্রমাণ খুঁজতে...কিন্তু ফিরছে সেই খালি হাতে। মরুভূমির তপ্ত পরিবেশেও মরুদ্যান থাকে,খুঁজলে ঠিকই পাওয়া যায়...কিন্তু রেহানের মরুভূমিতে অদিতি বৃষ্টি হয়ে ঝরলেও ওকে শান্তি দিতে পারছেনা।
                      রেহান স্মৃতির জালে আটকে থেকে নিজেকে শেষ করবে এমন ছেলে নয়,অথচ তনিমার স্মৃতির ভগ্নাবশেষ ওকে তাড়া করে পুড়িয়ে দিচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে। সেই পোড়া ক্ষতে অদিতির ভালোবাসার প্রলেপ উপহাস মাত্র।
রেহান দু বছর আগেও পুড়েছিল... দুবছর বাদেও পুড়ছে...সময়টাই বদলেছে যা,কারণটা একই রয়েছে।
                    বৃষ্টি পড়ছে,কে জানে অদিতিই পাঠিয়েছে কিনা ওর জন্যে! কিন্তু এ বৃষ্টিতে ভিজলেও রেহানের পুড়ে যাওয়া আটকাবেনা।  সে অধিকার তনিমা রেহানকে দেয়নি।

                              ৮

"শালা এক থাবড়া মারবো কানের গোড়ায়,বাল তনিমা মারাচ্ছ তুমি? দুবছর আগে যেটা শেষ হয়ে গেছে,যে তোকে শেষ করে দিয়ে গেছে তার নেশায় মাতাল হওয়া বন্ধ কর রেহান।"
"আমি পারছিনা,আমি কিছুতেই পারছিনা...তনিমা আমাকে এখনো পুড়িয়ে যাচ্ছে ওর ভালোবাসায়,আমি কিছুতেই ওর এই মাদকতা ভোগ না করে থাকতে পারবোনা।"
"রেহাআআন!" শোভন চিৎকার করে উঠলো "ওর ভালোবাসার নেশা তোকে ধ্বংস করে দিয়েছিল,তোর মনে নেই? ওর ভালোবাসায় ধ্বংস ছাড়া কিছু নেই। গোলাপের কাঁটার মতো তোকে ফুঁড়ে রেখে দেবে ও।"
"তবুও তো এতকিছুর পরে মানুষ গোলাপটাকেই চায় বল,কাঁটার কথা কে ভাবে?"
"তুই ভাববি,তোকে ভাবতে হবে...রেহান এটা কল্পনার উপন্যাস না,এটা তুই...আর এটা তোর গল্প, যেটাকে পরিণতি দেওয়ার অধিকার একমাত্র তোর হাতে।"
"আমি চাইনা এরম গল্প লিখতে! যে গল্পের লেখক এক অজানা শোকে নিজেকে হারিয়ে ফেলছে প্রতি ক্ষণে সেই গল্পের পরিণতি ধ্বংস ছাড়া কিছু হয়না,কিছু হতে পারেনা।"
"তোর এই গল্পটাতো নতুন ছিলো, আর অদিতিকে দিয়ে শুরু হয়েছিল, আজকে সেই অদিতিই তোর গল্পের পরিণতি না হয়ে ধ্বংসস্তুুপ হয়ে গেল?"
রেহান চুপ করে থাকল। কিছু বললো না। কি বলবে ও? ও স্বেচ্ছায় যেখানে কাঁটাতারে বিদ্ধ হতে চায় সেখানে সেই কাঁটাতার ওর মুখরতাকে খুন করে ওকে মৌনতা উপহার দিয়েছে। ও আস্তে আস্তে বলল
"মদ পুরোনো হলে নেশা বাড়ে।"
"আর সেটা বিষাক্ত হয়ে যায়...এটা বললিনা?"
"আমার কাছে প্রতিষেধক নেই,তাই তনিমার কাছে একবার হলেও যেতে হবে...কারণ বিষ যে বানায় সে প্রতিষেধকও রাখে।"
"তনিমা নয় রেহান, অদিতি...অদিতিই  তনিমার বিষের প্রতিষেধক।"
"প্রতিষেধকের কাজ মানুষকে বাঁচিয়ে তোলা,কই অদিতি যদি তাইই হয় তাহলে আমি কেন মরছি রোজ রাতে?"
"কারণ তুই নিজে বাঁচতে চাসনা,যে অন্ধকারে তুই থাকিস সেটা কেউউ বাঁচার জন্য বেছে নেয়না।"
"আমি বাঁচতে চাই শোভন,আমি অদিতির ভালোবাসাতেই বাঁচতে চাই,কিন্তু অদিতি চেষ্টা করেও পারছেনা বাঁচাতে আমায়।"
                       শোভন জানে রেহান একবুক কষ্ট নিয়ে আজ এসেছে ওর কাছে,আজকের রেহানকে ও দুবছর আগে দেখেছিল,আজ আবার দেখছে। পার্থক্য একটাই- তখন রেহান পালাতে চেয়েছিল তনিমার সাজানো মৃত উপত্যকা থেকে...আজ রেহান ওখানেই ফিরতে চায়।
              শোভনের চোখ দুটো হঠাৎ জ্বলে উঠল...না কিছুতেই না,ও কিছুতেই রেহানকে ওই মৃতের দেশে যেতে দেবেনা। রেহানকে ও নতুন করে হারাতে চায়না আবার।

শোভন রেহানের পিঠে হাত রেখে বলল"ও ঠিকই চেষ্টা করছে রে,তুই বুঝেও বুঝতে পারছিস না। একটু নেশাটা কাটুক,তুই বুঝবি।"
"তুই আমায় হেল্প করবিনা রে যাতে নেশাটা কেটে যায়?" রেহান অসহায়ের মতো শোভনের হাত ধরে মিনতি করলো। শোভন নিজের চোখের জলটা ঢাকতে রেহানকে জড়িয়ে ধরে বলল– "করবো।"

                              ৯


"তোমাকে বুঝিনা প্রিয়
  বোঝোনা তুমি আমায়
  দূরত্ব বাড়ে যোগাযোগ
  নিভে যায়।"
                সত্যিই নিভে গেছে যোগাযোগ। আজকাল অদিতি আর নতুন করে যোগাযোগ বাড়ায় না রেহানের সাথে। যে যোগাযোগটা আছে সেটা নিছকই দায়ে পড়ে। সত্যিই কি দায়ে পড়ে? নাকি অদিতি মনের অনুভূতির কাছে ধরা পড়ে যাবে সেই ভয়ে দায় শব্দের আড়ালে লুকিয়েছে নিজেকে। অদিতি আর ভাবেনা এসব।
                      অদিতিও কোথাও না কোথাও ওর পুরোনো জীবনটাকে চাইছে, যেখানে অদিতি কৈফিয়ত দিতো না কাউকে,যেখানে অদিতি নিজের জন্য ভাবত। কিন্তু সেটা হচ্ছে কই? ও তো রেহানের কাছে রীতিমতো নিজেকে সঁপে দিয়েছে। অথচ রেহান ওকে এসব কিছুই বলেনি। ও নিজের ইচ্ছেতেই এই রাস্তায় এসেছে। এই রাস্তায় রোম্যানটিসিসম্ নিয়ে হাঁটবে... এরমই শখ ছিলো।
             আসলে অদিতিরও মনে হয় যে একটা ফাঁকা জায়গা তাদের সম্পর্কে বাসা বেঁধেছে। ফাঁকা জায়গাটা খুব স্পষ্ট ভাবেই দৃশ্যমান। কিন্তু কারণটা অদৃশ্য। সেটাই বিরক্তির কারণ।
             এর মাঝে রেহানের সাথে কথা হয়েছে, খুবই ক্লিশে কথাবার্তা, নতুনত্ব কিছু নেই। তবে রেহানের কথা শুনে মনে হয়েছে যে ও কিছু একটা বলতে চায়,কিন্তু পারছেনা। আটকে যাচ্ছে অদিতির মতো।
মনের মধ্যে একটা বিশাল মেঘ তৈরি হয়েছে দুজনেরই। দুজনের আকাশে যে রোদের ছটা ছিলো সেটা আবছা হয়ে যাচ্ছে দ্রুত। আর বলিহারি হাওয়াদেরও...যেন এই কয়েকদিন বেশি জোরে বয়ে যাওয়ার বরাত পেয়েছে আর সেটা করতে গিয়ে মেঘ গুলোকে যত পারছে নিয়ে চলে আসছে অভিমানীর মতো।
তাইতো অদিতি আরো সাবধানী, হাওয়ার সামনে দাঁড়ায় না মোটেই...যদি হাওয়ার ঝাপটায় ওর মন খারাপের কথাগুলো একবার উড়তে শুরু করে তাহলে এলোমেলো  অদিতি আর নিজেকে গুছিয়ে উঠতে পারবেনা।
তবে আজ বাতাসে বৃষ্টির আনাগোনা বেশিই। অদিতি বুঝলো আজকে জানলার শার্সিতে জলের দাগ পড়বে গভীরভাবে।
   

                               ১০ 


রেহান নিজেকে সামলেছে অনেকটা। ও ভীষণ ভাবে অনুভব করতে পারছে যে ওর এই আকাশে অদিতি নামক তারার বড্ড দরকার। রেহান জানে যে ও অদিতিকে কাছে টানতে গিয়ে আরো দূরে সরিয়ে দিয়েছে। আসলে ও সময় চাইছিল।  রেহান বুঝতেই পারছিলো না যে ও কি সত্যিই অদিতির সাথে থাকতে চায় নাকি নিছকই সম্পর্কের আড়ালে ওর পুরোনো জীবনটাকে সাজাতে চায়। এখন রেহানের মনে হচ্ছে যে ও অদিতির সাথে যে সম্পর্ক পালন করছিল তা অদিতিকে কষ্ট ছাড়া কিছুই দেয়নি। ও অদিতিকে ব্যাবহার করেছে নিজেকে ভালো রাখার জন্য...কিন্তু কখনো ভাবেনি অদিতির কথা। অদিতি রোজ ওকে বলতো যে - "আমি থাকতে তোমার কষ্ট কিসের?" তার উত্তরে রেহান বলতো -" সে জন্যই তোমাকে এনেছি আমার জীবনে।" কিন্তু কখনোই বলেনি যে - "আমি থাকতে তোমারও কষ্ট নেই।" এতটাই স্বার্থপর রেহান।
             কথা বলা দরকার, রেহানের অদিতিকে কিছু একটা বলা দরকার। আজ ৫ দিন  হয়ে গেল কেউ কাউকে কিছুই বলেনি। কিন্তু বলা দরকার এখন। দুজনের মধ্যে যে পাহাড়টা দাঁড়িয়ে আছে সেটা খোদাই করতে হবে।
           রেহানকে শোভন বলেছে যে অদিতিকে অদিতির মতো করে দেখতে...তনিমার সাথে ওকে মেলাতে যেন না যায়। আসলেই তাই, রেহান এই জায়গাটাতেই হেরে গেছে। ও কিছুতেই মানতে পারতনা যে তনিমার জায়গায় বসিয়ে অদিতিকে পেতে গেলে ওর আসল অদিতিকে পাওয়াই হবেনা...যে অদিতি ওর নিজের। এই অদিতি তাকে নিয়ে যে স্বপ্ন সাজাচ্ছিল সেটা রেহান কিছুটা জেনেই তছনছ করেছে।
রেহান যে বর্তমানকে প্রাক্তন করে রেখেছিল এতদিন, সেই বর্তমানে থেকেই যে অদিতি এখনো ভবিষ্যৎ গড়ে যাচ্ছে সেটা রেহান জানতে চায়নি।
                  "তোর মনে রাখা উচিৎ যে তোর ফেলে আসা অতীতকে নিজের অতীত ভেবে যে মেয়ে মুছে ফেলতে চায় দিনরাত এক করে সেই তোর ভবিষ্যৎ। কটা মানুষের সুযোগ হয় বল ভবিষ্যৎকে দেখার, তোর হয়েছে...তাহলে কেন এত ভয়? কেন এত দোটানা? আত্মসমর্পণ মানে সবসময় হেরে যাওয়া নয়...তুই একবার ওর কাছে নিজেকে মেলে দেখ কে জেতে...তুই না তোর অতীত!"
শোভনের কথা গুলো বুকে বাজছে রেহানের কাল রাত থেকে। ঠিকই তো, রেহান সব শেষ ভেবে যখন হাল ছেড়ে দিয়েছিল ঠিক তখনই অদিতি ওর জীবনতরীর হাল ধরেছে। আর রেহান  জানে মাঝি ছাড়া এ তরী কোনোদিনো ধ্রুবতারাকে অনুসরণ করে পাড়ে ফিরতে পারবেনা।

                             ১১ 
"আমি জানি আমি ভুল করেছি,কিন্তু তুমি ফোন কেটে দিওনা প্লিজ... "
"কেন রেহান,তোমার তো আমাকে প্রয়োজনে দরকার হয়,তুমি তো অপ্রয়োজনে আমাকে কোনোদিনো ফোন করোনি,তাহলে আজ কেন?"
"আমার তোমাকে ভীষণ প্রয়োজন অদিতি,আমি আর পারছিনা তোমার কাছে নিজেকে আড়াল করতে।"
"তুমি তো আড়ালে থেকেই আমাকে কষ্ট দিয়ে গেছো, তাহলে আজ কেন প্রকাশ্যে এলে? আরো কষ্ট দেবে এই ভেবে?"
"নাআআ!" রেহানের গলায় যে দলা পাকানো কান্নাটা ছিলো সেটা ছিটকে বেরিয়ে পড়ল।
"না অদিতি না,আমি তোমাকে কষ্ট দিতে ফোন করিনি,আমি তোমাকে নতুন করে ডাকছি আমার জীবনে, আমাকে দূরে ঠেলে দিওনা।"
"আমি কেন তোমার এই মায়া ভরা জীবনে যাবো বলো,তোমার জীবনের তারে নতুন সুর কোথায় রেহান? তুমি আমাকে ভেবে আজ ওবধি কদিন সুর তৈরি করেছ বলো? তোমার পুরোনো সুর আমি পারিনা শুনতে....আমার দমবন্ধ হয়ে আসে রেহান...আমি পারিনা সুরের মানে বুঝতে..." অদিতি আর নিজেকে আাটকাতে পারলনা। শার্সিতে জলের দাগ বড়ো গভীর ভাবে দাগ কেটেছিল ওদিন,অদিতি ওদিন মনকে কিছুতেই আটকাতে পারেনি বৃষ্টির হাতে ভেজার থেকে।

                  অদিতি কান্নাভরা গলায় চিৎকার করে উঠলো –" আমি তোমাকে ভালোবাসি রেহান,এই কথাটা কতবার তোমাকে বোঝাবো? কেন নিজের মনের পাথরটাকে সরিয়ে এই কথাটাকে বুঝতে চাওনা তুমি? কেন আমাকে রোজ তুমি ধূপের মতো পোড়াও তোমার আগামীকালটাকে সুগন্ধি করে তোলার জন্য? আমার কথা একবারও মনে হয়না যে আমি তোমার জন্য সুগন্ধ ছড়িয়ে নিজে ছাই হয়ে পড়ে থাকি? কেন এত নিষ্ঠুর তুমি রেহান...কেনওওওও?" অদিতি ভেঙে পড়েছে কান্নায়।
রেহান অদিতির গলা শুনে ফোনের ওপারে নিঃশব্দে কেঁদে চলেছে। বহু কষ্টে
বলল -
"আমি তোমাকে ভালোবাসা দিতে পারি এই ধারণাই হয়নি আমার,আমি নিজে যেখানে ভালোবাসা পাওয়ার জন্য দিনরাত মরতাম সেখানে তোমাকে ভালোবাসার যোগ্যতা আমার নেই আমি ভাবতাম।"
"তুমি ভুল রেহাআআন,তুমি ভুল।"
"হ্যাঁ আমি ভুল অদিতি, আমি ভুল...আমি জানি আমাকে ছাড়া তোমাকে আর কেউ ভালোবাসতে পারেনা। এ অধিকার তুমি কাউকে দাওনি। তাই বলছি, প্লিজ অদিতি আর একবার তোমার ভালোবাসায় আমার আকাশটাকে ভরিয়ে দাও...আমি কথা দিচ্ছি তোমাকে কোনোদিনও কোনো অভিযোগ করতে দেবোনা।"
"রেহান,আমি তোমাকে বলছিনা তোমার সবটুকু ফেলে তুমি আমাকে সময় দাও...কিন্তু তুমি কি চাইলে পারোনা তোমার জীবন থেকে খানিকটা সময় শুধু আমার জন্য তুলে রাখতে? আমার মুখে একটুখানি হাসি এনে দিতে পারবেনা তুমি?"
রেহান একটু চুপ করে থেকে বললো–
"তুমি ঠিক বলেছ,আমি না আসলে কোনোদিন ভাবিনি এভাবে। আমি...আমি নিজেই হারিয়ে গিয়েছিলাম,কিন্তু  একবারের জন্যও ভাবিনি যে তুমি আমার জন্য অপেক্ষা করছো।  আমি...আমি চাইলেই পারি তোমার আমার চিত্রনাট্যটাকে মিলিয়ে দিতে,তোমার মুখে হাসি আনতে। আমি চাইলেই তোমাকে আমার আাকশের তারা করতে পারি...আর আমি তাই ই চাই অদিতি...আমি তাই চাই।"
"তাহলে কথা দাও আমাকে আর অপেক্ষা করাবেনা।"
"কথা দিচ্ছি সব অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে দিলাম আজ এখনি।"
"কথা দাও আমার শহরে আমার আাকশের নিচে হাত ধরে বলবে ভালোবাসি।"
"ভালোবাসি, খুব ভালোবাসি অদিতি তোমাকে।
তুমিও কথা দাও... "
"কী"
"তোমার সব কবিতার শিরোনামে আমি থাকবো।"
"থাকবে,তোমায় আমার সব কবিতা আজ জমা দিলাম,সব...।"
বৃষ্টি থেমে গেছে,রাতের আকাশে এক ঝাক তারার আলোয় রেহান অদিতি দুজনের মুখটা যেন দেখতে পেল আর শুনল দুজনের মনে একটা নামেরই সুর বেজে চলছে–

"রেহানাদিতি।"


 (সমাপ্ত)



বৃষ্টি শেষে " গল্প টি পরে কেমন লাগলো অবশ্যই মন্তব্য করে জানাবেন যদি ভালোলেগে থাকে তাহলে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না।💕💕💕

Post a Comment

0 Comments