Bangala Golpo পড়তে কারনা ভালো লাগে তাই আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি নতুন একটি Comedy Story -"কাহিনী" | World Library এর এই Full of Comedy গল্পটি অবশ্যই আপনাদের পছন্দ হবে ।
কাহিনী
মেঘলা আর ইন্দ্রর বিয়ে ঠিক তো হয়েই গিয়েছিল। কিছু দিন ডেট করার পর ওদের বিয়ে হয়েছে দুমাস হল। মেঘলা এখন শিলিগুড়িতে থাকে, সবার সাথে। এখন ফটোগ্রাফিতে বেশি মন দিয়েছে, কারণ ওদের কোম্পানির এডভেটাইসিং ফটোশুটের এর সাইড টা ও দেখে। নিজের একটা স্টুডিও খুলেছে। সবসময় অবশ্য কাজের চাপ থাকে না। ব্লগস এখন কম বানায়। কিন্তু রমরমিয়ে চলছে ওর চ্যানেল যেখানে ও বিভিন্ন মানুষের জীবনের গল্প বলে। কাহিনী তার নাম। ইন্দ্রও হেল্প করে,ঈশানিও চেষ্টা করে যতটা সম্ভব সাহায্য করার। ইন্দ্র খুব ভাল লিখতে পারে কিন্তু ওকে দিয়ে কিছু লেখাতে হলে বেচারিকে অনেক তপস্যা করতে হয়। ইন্দ্র ইচ্ছে করে এই কাজ ওই কাজ বলে বাহানা বানায় কারণ ওই একটা সময় মেঘলা একটু নরম সুরে গদগদ হয়ে কথা বলে, আর তখনই ইন্দ্র যা একটু সম্মান টম্মান পায় ওর কাছে আর নাহলে যা ঝগড়া করে! অবশ্য ইন্দ্র সেটাও বেশ এনজয় করে। কখনো কখনো বেশ খানিক্ষণ টিকেও যায়! কিন্তু আজ পর্যন্ত জিততে পারেনি। এমনিতেই দাদা বৌদি তো ওর দিকেই ঝুকে ছিল, কিন্তু এখন পুরোপুরি নিজের দিকে করে নিয়েছে, এখন আবার রুশাটাও ওর সাইডে। মাঝে মাঝে ঈশানিরই যা সাপোর্ট পায়। তবে হ্যাঁ ও বাড়িতে এন্টারটেডমেন্টের কোন কমতি নেই
এরম একটা সকালে....
ইশানি আর রুদ্র রেডি হচ্ছিল। ইশানি ওকে টাই বেঁধে দিচ্ছিল।
--দাদাআআ! বাঁচা
আর একটু হলে ভিরমি খেত দুজন
রুদ্র--উফফ! এদের দুজনের বিয়ে দিয়েও শান্তি নেই। এখন এদের একে অপরের থেকে বাঁচাতে আমার প্রাণ যাচ্ছে।
ইশানি--চল দেখি এবার কি হল
রুদ্র ঘর থেকে বেরতেই ইন্দ্র প্রায় ধাক্কা খেয়ে পরে যাচ্ছিল। কোন রকমে সামলে রুদ্রর পেছনে এসে লুকাল। মেঘলা একটা ফুলদানি নিয়ে তারা করে এসেছে।
--মেঘলা মেঘলা কি হয়েছে?
--জিজু তুমি সরে যাও, একে আজ আমি দেখে নেব
--সারাদিন তো দেখিস মা আর কত দেখবি
ইন্দ্রকে বাঁচাতে বাঁচাতেই বলল রুদ্র।
--জিজু তুমি সর,
--আস্তে ওকে মারতে গিয়ে আমার মাথায় ওটা ভঙ্গিস না। এবার নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে বলল রুদ্র
--তুমি জান ও কি করেছে, এটাত আজ ওর মাথাতেই ভাঙব বলে তেড়ে এল
--দেখ তোর বরের মাথা তুই ভাঙবি এত খুব ভাল কথা, শুধু কাল পর্যন্ত একটু ওয়েট কর একটা ইম্পর্টেন্ট মিটিং আছে তারপর হাত পা যা ইচ্ছে ভাঙিস
ইন্দ্র--দাদা! তুই কি সত্যি সত্যি আমার দাদা?
মেঘলা--আমারও তাই সন্দেহ হয়। জিজু তোমার মত এত গুড লুকিং, এত ইন্টিলিজেন্ট ছেলের এরম বাদর মার্কা ভাই হল কি করে?
রূদ্র-- কি আর করা যায় জঙ্গল থেকে তুলে এনেছিলাম।
ইন্দ্র--দাদা! ইশানি, বৌদি আমার একমাত্র ভরসা। এই রাক্ষসীটার থেকে আমায় বাঁচা। ইশানি ততক্ষনে বেরিয়ে এসেছে। ইন্দ্র ছুটে গেল ওর পেছনে লুকোতে। মেঘলাও পেছন পেছন ছুটে এল ফুলদানি নিয়ে।
--রাক্ষসী কাকে বললে?
--মেঘলা কি করছিস? কি করছিস? মাথা ফেটে যাবে। নামা ওটা নামা
--তুমি শুনলে আমায় কি বলল?
রুদ্র ওর আগুনে ঘি ঢেলে বলল
--হ্যাঁ শুনলে ইশানি তোমার বোনকে রাক্ষসী বলল
ইশানি--রুদ্র তুমি চুপ করবে। তুমি নামাবি
মেঘলা মুখ কাচুমাচু করে নামিয়ে নিল।
ইশানি--এবার বল কি হয়েছে? কেন মারতে যাচ্ছিলি?
মেঘলা--ও আমার ফোটো গুলোতে শশ ফেলে দিয়েছে।
ইশানি--ইন্দ্র!
ইন্দ্র--ও আমার ফাইলে জুস ফেলে দিয়েছে
--বেশ করেছি
--তাহলে আমিও বেশ করেছি
ইশানি--অফফ একটু চুপ করবি? খাবার গুলো কি ছুড়ে ফেলার জন্য। মেঘলা জানিস না ফাইল গুলো ইম্পর্টেন্ট ছিল, মেঘলা মুখ গোমড়া করে উত্তর দিল
--ওগুল প্রিন্ট আউট ছিল, ল্যাপটপে সব অক্ষত আছে। তবে ফটো গুলোও আমাদের কোম্পানির ফোট ছিল। প্রোডাক্টের আডের জন্য কাল জিজু তুলতে বলেছিল। এতে ইশানি একটু দমে গেল। রুদ্র রেগে গিয়ে বলল ইন্দ্র দিনদিন বাচ্চা হয়ে যাচ্ছিস। জানিস ওগুল কত ইম্পর্টেন্ট
--ওর পেনড্রাইভের সব সেভ আছে, আর তাছাড়া জাস্ট একটা ছবি নষ্ট হয়েছে।
এবার ইশানি আর রুদ্র খানিকটা নিশ্চিন্ত হল। কিন্তু সাথে সাথেই ওরা আবার ক্ষেপে উঠল।
--দাদা আমার ফাইল
--দিদি আমার ফটোগ্রাফ
--উফফ চুপ করবি?
রুদ্র-- ইন্দ্র এই সমস্যাটার পরে সমাধান করব, এখন যা রেডি হয়েনে অফিসে লেটে পৌঁছনো আমি একদম পছন্দ করি না। আর ল্যাপটপ টা নিস ফাইল টা আরেকবার প্রিন্ট আউট করে নিবি।
ইশানি--মেঘলা ফোটো শুট আছে আজও ভুলে যাসনি নিশ্চয়। যা রেডি হয়ে
--কিন্তু...
--কোন কিন্তু না এবার সব নালিশ সব এসে শুনব যা। কি আর করা দুজন দুজনকে ভেংচি কেটে চলে গেল।
তিন দিন পর(দুপুর বেলা).....
সেদিন রবি বার ছিল। ইন্দ্র আর রুদ্র জলপাইগুড়ি গিয়েছিল কোন একটা কাজে। এই দিন মেঘলা নিজের কাহিনী চ্যানেলটার জন্য ভিডিও রেকর্ড করে।মাইক আর গিলটারের সামনে বসে মেঘলা ভয়েস রেকর্ড করার চেষ্টা করছিল। ইশানি তখন নিজের ঘরে বসে একটা বই পড়ছিল, পাশেই রুশা ঘুমিয়ে আছে। হটাৎ মেঘলা এসে ঈশানির কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরল। ইশানি বইটা পাশে রেখে মাথায় হাত বুলিয়ে বলল
--কি রে হয়ে গেল রেকর্ড করা?
--দুর কিছুই হয়নি
--তাহলে
--ভাল লাগছে না
--কেন সারা সপ্তাহটা তো এই দিনটার জন্য অপেক্ষা করিস, এই গল্পটা আজ বলব ওই গল্পটা বলব!
--কিন্তু আজ আমার হাতে ভাল কোন গল্প নেই, কি বলব?
--সেকি!
--কেউ কোন ভাল গল্প মেইল করেনি যেটা বলব চ্যানেলে
--আচ্ছা এই ব্যাপার। বোধয় পাঠিয়েছে তুই ভালটা বাঁছতে পারছিস না। আমায় দে আমি বেছে দিচ্ছি। দেখি কে কি পাঠিয়েছে।
--আচ্ছা দিদি তোমার আর জিজুর লাভ স্টোরিটা আমি চ্যানেলে দেব।
--হোয়াট?
--হ্যাঁ, বলনা তোমাদের লাভ স্টোরিটা। আমি এখনও জানি না, বলনা কি করে তোমাদের প্রথম দেখা আর প্রেমের শুরু হল,তুমি তো ইন্দ্রর ফ্রেন্ড ছিলে কলকাতায় থাকতে কি করে এলে শিলিগুড়ি কি করেই বা জিজুর সাথে দেখা হল
--ঈশানি একটু ভাবল, কিছুক্ষন চুপ থেকে তারপর একটা জোরে নিশ্বাস নিয়ে তারপর বলল আচ্ছা বলব কিন্তু এখন না, আর তুই কিন্তু ওটা চ্যানেলে দিবি না।
--আচ্ছা ঠিক আছে বলে মাথাটা আবার ঈশানির কোলে রাখল। আচ্ছা জিজু ফোন করেছিল, কখন আসবে কিছু বলল
--হুমম সন্ধের মধ্যে ফিরছে কেন তোকে ইন্দ্র ফোন করেনি
--না আমাদের ঝগড়া হয়েছে।
--উফফ আবার তোরা না পারিসও বটে? তা এবার কি হল। ও তোর ক্যামেরার লেন্স ভেঙেছে নাকি তুই ওর ফোনের ক্যামেরাটা ভেঙে দিয়েছিস?
--উফফ সেরম কিছু না
--তাহলে?
--জান আমি কাল রাতে একটা খাবার রেসিপি দেখে কত ভাল করে বললাম যে দেখ এটা না আমি কাল তোমার জন্য ব্রেকফাস্টে বানাব? তুমি খাও তো
--তো
--ও ওটা দেখে আমায় জড়িয়ে ধরল
ইশানি একটু কেশে বলল
--আচ্ছা! তাহলে তুই রাগছিস কেন?
--কারণ জড়িয়ে ধরে বলল, আমি তোমায় খুব ভালবাসি, তোমার সাথে অনেকটা সময় কাটাতে চায়, এত তাড়াতাড়ি মরতে চায়না। রান্না করার চিন্তা মাথা থেকে বাদ দাও। বল তুমি রাগ হবে না। প্রথম দুটো কথায় তো আমিও খুশি হয়ে গিয়েছিলাম, কিন্তু ওই হুল বেড়াল!
ঈশানি হেসে যাচ্ছে চিৎকার করে হাসতেও পারছে না,রুশা জেগে যাবে
আমি মানছি আমি রান্নাটা তোমার মত পারি না, আর দু একবার এমন কিছুও বানিয়েছি যা আমি নিজেই বুঝিনি কি বানিয়েছি তা তাও ওরোম বলবে বল!
--ও তোকে রাগানোর জন্য বলেছে। নাহলে তুই যা বানাবি তাই খাবে। শোন তোকে একটা গল্প বলি....
বলতে বলতে ইশানি হারিয়ে গেল অতীতে। বেশ কয়েক বছর আগে রুদ্রর আর ওর বিয়ের তখন তিন চার মাস হয়েছে। রাত্রে ডিনারটা ওরা সবাই একসাথে করত।প্রায়ই ইশানি রান্না করত।একদিন ও ওদের দুজনের মনের মত করে অনেক কিছু রান্না করেছিল। তার মধ্যে চানা মশলা, আর ইন্দ্রর জন্য কাশ্মীরি আলুর দম ছিল। প্রথমে না রুদ্র টেস্ট করেছিল। তারপর হটাৎ চানা মশলার প্লেট টা নিয়ে নিল....
রুদ্র--এটা পুরো আমার
--আরে কি করছ রুদ্র আমাদের তিন জনের জন্য ওটা
--উম্ম হুম আমি পুরোটা খাব, কেউ ছোবে না
--দাদা মানছি তোর ফেবারিট তা বলে তুই পুরোটা খাবি
--হুমম তোর জন্য তো আছে কাশ্মীরি আলুর দম ওই দিয়ে খা
--উমম আমি ওটাও টেস্ট করব ওই প্লেট টার দিকে হাত বাড়াতেই রুদ্র সরিয়ে নিল।
--ঈশানি দেখ
--আরে রুদ্র কি করছ, এরম কেউ করে, নামও প্লেটটা
--তোমরা নিজেদেরটা খাও এদিকে কেউ তাকাবে না।
কি আর করার ওরা নিজেদের খাবারে মন দিল। কিন্তু হঠাৎ করে ইন্দ্র খেতে খেতে রূদ্রর প্লেট থেকে তুলে এক চামচ মুখে পুরে নিল। তারপরেই কাশতে লাগল
ইশানি--আরে কি হল
--কিছু না দাদার দিকে আর চোখে তাকাল। রুদ্র ও তাকাচ্ছে।
চানা মশলা টাকি...
ইন্দ্র--খুব ভাল হয়েছে ইশানি, ওই জন্যই দাদা কাউকে দিচ্ছে না। দারুন। ইয়াম।
রুদ্র--ভাই তোর এত ভাল লেগেছে, তাহলে আর এক চামচ খা
--না না দাদা ঠিক আছে তুই খা
--না ভাই আমি বুঝতে পেরেছি আমি খুব বাজে কাজ করেছি তোর সাথে শেয়ার না করে, কিন্তু শুধু তোর সাথেই শেয়ার করব ঈশানির দিকে তাকিয়ে বলল রুদ্র। নে খা বলে এক চামচ মুখে পুরে দিল।
--উমমম, ব্যাস ব্যাস।
--আরে ব্যাস কি আরেক চামচ খা বলে আবার খাইয়ে দিল। ইন্দ্র ঈশানির দিকে তাকিয়ে একটা স্মাইল দিয়ে আবার খেল।
ঈশানি--একবার আমায় দাও তো
ইন্দ্র--না না তোকে খেতে হবে না
রুদ্র--হ্যাঁ নিজেরটা খাও
ঈশানির কি মনে হল ও এক হটাৎ করেই এক চামচ রুদ্রর কাছ থেকে নিয়ে খেয়ে ফেলল।
ইশানি--ছি! এত নুন।তোমরা খাচ্ছ কি করে? এই জন্য আমায় খেতে দিচ্ছিলে না!
ঈশানির গল্প শেষ হতেই ওরা হাসিতে ফেটে পরল। পাশে রুশা একটু নড়ে চড়ে উঠতেই ওরা আওয়াজ থামিয়ে দিল।
--তারপর?
--তারপর আর কি?ওটা খাওয়া থেকে ওদের উদ্ধার করলাম,নাহলে রূদ্র তো ইন্দ্রকে খাওইয়েই ছারত
--দোষ কিন্তু ইন্দ্রর, জিজু তো বারণ করেছিল। তবে জিজু তোমায় কত ভালবাসে বল! তাই তোমার যাতে খারাপ না লাগে তাই কিচ্ছু বলেনি, কিন্তু আমি কিছু বানালে ইন্দ্র আগে ট্রোল করবে তারপর মুখে দেবে
--কিন্তু তাও খাবে দেখিস
--আচ্ছা এই স্টোরিটা আমি দেব আমার চ্যানেলে
--একদম না এটা তোর আমার মধ্যেই থাক
--তাহলে আমি কি বলব ওটাতে
--তুই ওর ফোনটা নিয়ে আয় আমি বেছে দিচ্ছি। আর এক কাজ কর চ্যানেলে ভাল করে এডভেটাইজ করে বল যে সবাই যারা যারা গল্প শুনতে চায় তারা যেন নিজেদের লাইফের যেকোন এক্সপিরিয়েন্স তোর সাথে শেয়ার করে। যাতে তুই তোর কাহিনী চালিয়ে নিয়ে যেতে পারিস।
--হুমম তাহলে আজ তাই করি! আজ গল্প বাদ। এবার গল্প তখনই আসবে যখন আমার কাছে ভাল গল্প থাকবে। চল আমি বলে আসি একবার।
--নমস্কার বন্ধুরা আপনারা যদি চান কাহিনি সিরিজটা চলুক তাহলে নিজেদের লাইফের এক্সপিরিয়েন্স শেয়ার করতে পারেন আমার সাথে যেকোন ছোটখাটো এক্সপিরিয়েন্স সেটা যাহোক হতে পারে কোন বিশেষ অভিজ্ঞতা, মোটিভিশনাল কিছু কোন অলৌকিক কিছু,রোমান্টিক, ট্রাজেডি যেকোন কিছু।সেটাকে গল্পের আকার দেওয়ার দায়িত্ব আমার। আজকের মত বিদায় নিলাম। দেখা হবে পরের গল্পে। আপনাদের গল্পে।
চলবে.....
আরো নতুন নতুন Bangla Golpo এবং Poem পড়ার জন্য এক্ষুনি আমাদের সাইটটিকে বুকমার্ক করে রাখুন এবং আমাদের ফেসবুক পেজ টি লাইক করুন যাতে পরবর্তী নতুন কোন Bengali Golpo বা Kobita আমাদের সাইটে প্রকাশ হলে আমাদের সাইটের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলির দ্বারা আপনি আপডেট পেয়ে যান ।
---------------------------------------------------------------------

0 Comments